মূল্যবৃদ্ধির আতসকাচের তলায় ব্যাঙ্ক-পোস্টঅফিসের মেয়াদি আমানতের রঙ কেমন ফিকে হয়ে যায় সেটা আমরা আগের পর্বে দেখেছি (এখানে পড়ুন, নিশ্চিত আয় প্রকল্পে মূল্যবৃদ্ধির ঘুণ পোকা, ব্যাঙ্ক-পোস্টঅফিসের বাইরে ভাবুন)। কিন্তু, তার মানে এই নয় যে ব্যাঙ্ক-পোস্টঅফিসে আমানত করবেন না। তবে, সারা জীবনের সঞ্চয় করা অর্থের পুরোটা ব্যাঙ্ক-পোস্টঅফিসে রাখাটাও সমীচীন নয়। কেননা, শেয়ার-মিউচুয়াল ফান্ডে লগ্নির ঝুঁকি এড়াতে গিয়ে সেক্ষেত্রে খেসারত দিতে হয় রিটার্নে। তাছাড়া, ব্যাঙ্ক আমানতে টাকা রাখারও যে ঝুঁকি আছে সেটাও মাথায় রাখতে হবে। কোনও ব্যাঙ্ক দেউলিয়া হলে বা উঠে গেলে, ওই ব্যাঙ্কে আপনার একাধিক প্রকল্পে কোটি টাকা আমানত করা থাকলেও ব্যাঙ্ক আমানত বিমার আওতায় আপনি সর্বোচ্চ ৫ লক্ষ টাকা ফেরত পেতে …
Category: Bengali
শেয়ার হারিয়ে গেলে কি করবেন !!
একজন মানুষ কষ্টার্জিত অর্থ যখন বিনিয়োগ করবার কথা ভাবেন তখন তার ভালো মন্দ সব দিকটাই বিচার করা প্রয়োজন। অনেকেই ব্যাঙ্কে টাকা রাখার সঙ্গে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার কিনে রাখেন। পুরনো দিনে ডিপোজিটরি ছিল না। অনেকের বাড়িতে বহু বছর আগে কেনা কাগজে ছাপা শেয়ার এখনও পাওয়া যায়। শেয়ার-এর আলাদা করে কোনো পাসবুক হয় না। আগেকার দিনের শেয়ারে শুধু থাকে একটি শংসা পত্র যাকে আমরা ইংরেজিতে সার্টিফিকেট বলে থাকি। কোনো কারণে সেটি হারিয়ে গেলে কি কি করণীয় তা জেনে রাখা খুব জরুরি। বাড়ি বদলের সময়, কোনো কারণে ব্যস্ততায় পাবলিক ট্রান্সপোর্টে যদি আপনার কোনো ব্যাগে রাখা শেয়ার সার্টিফিকেট হারিয়ে যায় তাহলে প্রথমেই আপনাকে স্থানীয় …
টাটা স্টিল – আত্মনির্ভরতার ইস্পাতনির্মিত ইতিহাস
জামশেদজি টাটা – একটি নাম, ভারতের প্রগতির ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। যিনি প্রায় একক প্রচেষ্টায় অসামান্য প্রত্যয় কে মূলধন করে বিহারের (বর্তমানে ঝাড়খণ্ড) এক প্রত্যন্ত অঞ্চলে একটি ইস্পাত কারখানা স্থাপন করেন, যা আজ ভারতের তথা বিশ্বের এক অন্যতম ইস্পাত উৎপাদনকারী সংস্থা হিসেবে গণ্য হয়েছে, যার নাম এখন ‘টাটা স্টিল’| আজ থেকে প্রায় ১১৩ বছর আগে, ১৯০৭ সালে এক ভারতীয়, জামশেদজির স্বপ্নের বীজ অঙ্কুরিত হয়েছিল, যা বপন করার পর চারাগাছটি তিনি আর দেখে যেতে পারেন নি। যদিও ১৯০৪ সালে তাঁর মৃত্যু হয়, তৎকালীন ‘টাটা আয়রন অ্যান্ড স্টিল কোম্পানি লিমিটেড’ ১৯১২ সালে পরাধীন ভারতে প্রথম ইস্পাত উৎপাদন শুরু করে। এই সুবিশাল কর্মকাণ্ড …
আমূল – ইতিহাসের সরণীতে বাণিজ্যের পথচলা
“যা নেই ভারতে তা নেই ভূভারতে”… মহাভারতের দেশ… রামায়নের দেশ… ভারতবর্ষ| সেই মহাভারতের কালে ব্রজভূমির সুস্বাদু মাখন পৌঁছেছিল গুজরাতের দ্বারাবতীতে, সুদূরদর্শী দ্বারকাপতির হাত ধরে। যে দেশ এক সময় শুধুমাত্র মুনিঋষিদের বলে সারা পৃথিবী জানতো, সেই মুনিঋষিদের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় ছিল ‘দুগ্ধ’ বা ‘দুধ ‘| সেজন্য তাঁরা গোধনের সেবা করতেন। এই যুগে সেই গোধন এবং দুধ কে বিপণনের এক উচ্চ মার্গে নিয়ে যাওয়া ‘আমূল’ ভারতীয় ব্যবসা বাণিজ্যের চিত্রটা অত্যন্ত মসৃন করে বুঝিয়ে দেয় | কে বলেন ভারতীয়রা বাণিজ্য বোঝেন না? ভার্গিস কুরিয়েন। ১৯২১ সালে অধুনা কোদাইকানালে যাঁর জন্ম | যিনি পরবর্তী সময়ে ‘দুগ্ধ মানব’ উপাধি পাবেন… কী অসম্ভব অধ্যবসায়, কী দুর্ধর্ষ বাণিজ্যবোধ! …
‘হামারা বাজাজ’ – ভারতের বাণিজ্য সংগ্রাম
১৯২৬ সাল ভারতবর্ষ শুধুমাত্র স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখছে। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের এই নাগপাশ থেকে বেরোনোর জন্য চারপাশে নানান আন্দোলন। ব্যবসা বাণিজ্য সব কিছুই তখন অস্থির সময়ের দলিল মাত্র। বাপু মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল যমুনালাল বাজাজের যিনি বাজাজ কোম্পানির মালিক ছিলেন অথচ স্বাধীনতা আন্দোলনের জন্য ব্যবসায় মনোযোগ দিতে পারতেন না। মহাত্মা গান্ধী তাঁকে পুত্র স্নেহে দেখতেন। যদিও সেই মুহুর্ত্বে তাঁর ব্যবসা একেবারেই নতুন কিন্তু তাতে তিনি মনোযোগ দিতে পারতেন না স্বাধীনতা আন্দোলনের জন্য। ভারতে স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে এমন অনেক ব্যবসায়িক সংগ্রামের কথা লেখা আছে। ১৯৪২ সালে ‘যমুনালাল বাজাজের‘ ছেলে ‘কমলায়ন বাজাজ’ মাত্র ২৭ বছর বয়সে ব্যবসার রাশ ধরেন। তিনি বাজাজ অটো এবং …
ক্যাপিটাল গেইনস ট্যাক্সের খুঁটিনাটি জেনে সুরক্ষিত করুন লাভের টাকা
বিনিয়োগ সাফল্যের মন্ত্রগুপ্তি হল, মূলধন এবং মুনাফা দুইই বাঁচানো। কিন্তু, যে কোনও ধরনের স্থাবর অথবা অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করে মুনাফা হলে ‘ক্যাপিটাল গেইনস’ হিসাবে সেই মুনাফার ওপর কর দিতে হবে। ১) ক্যাপিটাল গেইনস ট্যাক্সের সুবিধা বেশি ইক্যুইটি লগ্নিতে সম্পত্তি <১২ ম্যাস ১২–২৪ মাস ২৪–৩৬ মাস >৩৬ মাস শেয়ার বাজারে নথিভুক্ত কোনও সংস্থার ইক্যুইটি* ১৫% ১০% ১০% ১০% ইউনিট ট্রাস্টের ইউনিট ১৫% ১০% ১০% ১০% ইক্যুইটি মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট ১৫% ১০% ১০% ১০% জিরো কুপন বা ডীপ ডিসকাউন্ট বন্ড করদাতার আয়করের প্রান্তিক হার ১০% ১০% ১০% শেয়ার বাজারে নথিভুক্ত নয় এমন সংস্থার শেয়ার** করদাতার আয়করের প্রান্তিক হার করদাতার আয়করের প্রান্তিক হার ১) অনাবাসীদের জন্য ১০% ইন্ডেক্সেশনের সুবিধা ছাড়া২) ভারতে বসবাসকারীদের জন্য ২০% ইন্ডেক্সেশনের সুবিধা সহ ১) অনাবাসীদের জন্য ১০% ইন্ডেক্সেশনের সুবিধা ছাড়া২) ভারতে বসবাসকারীদের জন্য ২০% ইন্ডেক্সেশনের সুবিধা সহ জমি–বাড়ি করদাতার আয়করের প্রান্তিক হার করদাতার আয়করের প্রান্তিক হার ২০% ইন্ডেক্সেশনের সুবিধা সহ ২০% ইন্ডেক্সেশনের সুবিধা সহ ডেট মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট করদাতার আয়করের প্রান্তিক হার করদাতার আয়করের প্রান্তিক হার করদাতার আয়করের প্রান্তিক হার ২০% ইন্ডেক্সেশনের সুবিধা সহ সোনার গয়না, কয়েন, ইটিএফ করদাতার আয়করের প্রান্তিক হার করদাতার আয়করের প্রান্তিক হার করদাতার আয়করের প্রান্তিক হার ২০% ইন্ডেক্সেশনের সুবিধা সহ শেয়ার বাজারে নথিভুক্ত বন্ড/ডিবেঞ্চার করদাতার আয়করের প্রান্তিক হার ১) অনাবাসীদের জন্য ১০% ইন্ডেক্সেশনের সুবিধা ছাড়া২) ভারতে বসবাসকারীদের জন্য ২০% ইন্ডেক্সেশনের সুবিধা সহ ১) অনাবাসীদের জন্য ১০% ইন্ডেক্সেশনের সুবিধা ছাড়া২) ভারতে বসবাসকারীদের জন্য ২০% ইন্ডেক্সেশনের সুবিধা সহ ১) অনাবাসীদের জন্য ১০% ইন্ডেক্সেশনের সুবিধা ছাড়া২) ভারতে বসবাসকারীদের জন্য ২০% ইন্ডেক্সেশনের সুবিধা সহ * ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ থেকে বছরে ১ লক্ষ টাকার বেশি লং-টার্ম …
কর দেবেন না কর বাঁচাবেন?
কর বাঁচাতে বিনিয়োগ করবেন না কর মিটিয়ে দেবেন? আপনার ধন্দ যদি এই নিয়ে হয় তবে, আপনি একা নন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাণপুরুষ বেঞ্জামিন ফ্র্যাঙ্কলিনও ১৭৮৯ সালে এই ধন্দে পড়েছিলেন। সেই সময় জ্যঁ-ব্যাপটিস্ট লেরয়কে এক চিঠিতে ফ্র্যাঙ্কলিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন সংবিধান প্রসঙ্গে লেখেনঃ ‘…মৃত্যু আর কর ছাড়া অন্য কোনও কিছুই নিশ্চিত নয়।’ আয়কর এড়ানোর নয়। তবে প্রশ্ন হলঃ কর দেওয়া উচিত না কর বাঁচানোর বিনিয়োগ করা উচিত? আয়কর আইন অনুযায়ী, কোনও ব্যক্তি বছরে নির্দিষ্ট সীমার অতিরিক্ত আয় করলে সরকারকে সেই আয়ের উপর কর দিতে হবে। এই ন্যূনতম আয়ের সীমাকেই বলে বেসিক এগজেম্পশন লিমিট। তবে, আয়কর আইন মেনে নির্দিষ্ট কিছু বিনিয়োগ ও ব্যয়ের …
ডিভিডেন্ড আয়ে কর দিতে হবে আপনাকেই
১৫ মার্চ শেষ অগ্রিম করের কিস্তির তারিখ ১ এপ্রিল ২০২০ থেকে আর ডিভিডেন্ড আয় আপনার হাতে করমুক্ত নয়। শেয়ার অথবা ইকুইটি ও ডেট মিউচুয়াল ফান্ড থেকে ডিভিডেন্ড পেলে সেটা আপনাকে ‘ইনকাম ফ্রম আদার সোর্স’ বা ‘অন্য উৎস থেকে আয়’ হিসাবে মোট বার্ষিক আয়ে যোগ করে তার ওপর আয়কর, অর্থাৎ, ডিভিডেন্ড আয়ে কর দিতে হবে। গত বছর মার্চ পর্যন্ত ডিভিডেন্ড আয়ের ওপর আপনাকে কোনও কর দিতে হতো না। কেননা, যে কর্পোরেট সংস্থা বা মিউচুয়াল ফান্ড হাউস ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে তাকে ডিভিডেন্ড ডিস্ট্রিবিউশন ট্যাক্স (ডিডিটি) দিতে হতো। ২০২০-২১ অর্থবছরের ফিনান্স অ্যাক্টে ওই ডিডিটি তুলে দেওয়া হয়েছে এবং ডিভিডেন্ড আয়ে কর দেওয়ার দায় …
কেন বিনিয়োগ করবেন শেয়ার/মিউচুয়াল ফান্ডে — পর্ব ৩
ইটিএফ — শেয়ারে লগ্নির সহজ উপায় শেয়ারে লগ্নি মানেই যে নিয়মিত খাতা কলম নিয়ে অঙ্ক কষে সংস্থার আর্থিক অবস্থা, কর্তৃপক্ষের কৌলীন্য প্রভৃতি বিচার করে তবেই বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে হয়, তেমনটা মোটেই নয়। বরং, এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড বা ইটিএফ-এর সৌজন্যে প্রতিটি সংস্থার ঠিকুজি-কুষ্ঠি, রাহু, গণ বিচার করে বিনিয়োগ করার দিন এখন অতীত। আর, এই ইটিএফের এমনই মাহাত্ম্য যে শেয়ার বাজারে পেশাদার বিনিয়োগকারীই হন বা হাতেখড়ি দিতে আসা শিক্ষানবীশ, সকলের বিনিয়োগ পোর্টফোলিওতে একটি-দু’টি ইটিএফ থাকা উচিত। এখানে উল্লেখ করতেই হয়, এ দেশের শেয়ার বাজারে যত বিদেশি বিনিয়োগ আসে তার সিংহভাগই ওই ইটিএফের মাধ্যমে। আমাদের তুলনায় প্রায় আটগুণ বড় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারে …
নজরে বাজেট
সরকারি ব্যয় বাড়িয়ে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করায় জোর ১৯৩০-এর দশকে বিশ্বজোড়া মহামন্দা কাটিয়ে উঠতে প্রখ্যাত ব্রিটিশ অর্থনীতিবিদ জন মেনার্ড কেইনসের নিদান মেনেই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন আগামী সোমবার তাঁর বাজেট প্রস্তাবনা পেশ করতে পারেন। অন্তত, সেই উপদেশই তাঁকে দিয়েছেন দেশের মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা থেকে শুরু করে নীতি আয়োগ সকলে। কেইনস বলেছিলেন, চরম মন্দার সময় চাহিদার অভাবে যখন বেসরকারি লগ্নি কর্পূরের মতো উবে যায়, তখন কেবল সরকারই পারে ব্যয় বৃদ্ধির মাধ্যমে অর্থনীতিতে সেই চাহিদা ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে। কোভিড-১৯ অতিমারীর কারণে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ভারত সহ গোটা বিশ্ব এখন সবচেয়ে ভয়ঙ্কর অর্থনৈতিক মন্দার সম্মুখীন, সম্প্রতি এই অভিমত জানিয়েছে বিশ্বব্যাঙ্ক। কোভিড অতিমারী আর …