নিশ্চিত আয় প্রকল্পে মূল্যবৃদ্ধির ঘুণ পোকা, ব্যাঙ্ক-পোস্টঅফিসের বাইরে ভাবুন ব্যাঙ্ক-পোস্টঅফিসে টাকা রেখে আপনি ভারি নিশ্চিন্তে অবসর জীবনের সঞ্চয় তহবিল গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখছেন। অথচ, ‘মূল্যবৃদ্ধি’ নামক ঘুণ পোকাটা যে ব্যাঙ্ক-পোস্টঅফিসে বেড়ে ওঠা আপনার মেয়াদি আমানত ক্রমশ ফোঁপরা করে দিচ্ছে সেটা খেয়াল করেছেন? না হলে, অবসরের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেখবেন, ব্যাঙ্ক-পোস্টঅফিসে জমানো সঞ্চয়ের টাকায় সংসার চালানোই মুশকিল হয়ে দাঁড়াচ্ছে। অবাক হচ্ছেন? দাঁড়ান, বিষয়টা তা হলে ভালো করে বুঝিয়ে বলি। মূল্যবৃদ্ধি কাকে বলে জানেন তো? আপনার, আমার মতো সাধারণ মানুষের ব্যবহৃত পণ্য-পরিষেবার দামে একটানা বৃদ্ধিই হল মূল্যবৃদ্ধি। ফলে, ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয়, বিনিয়োগ প্রভৃতির ক্ষেত্রে ‘মূল্যবৃদ্ধি’র গুরুত্ব যে কতটা সেটা অনুধাবন করতে নিশ্চয় কোনও …
Category: Bengali
এমআরএফ – ভারতের সবচেয়ে মূল্যবান শেয়ার
ক্রিকেট বিশ্বের বিখ্যাত খেলোয়াড়রা প্রায় প্রত্যেকেই একটি ‘ব্র্যান্ড’-এর সঙ্গে যুক্ত। তাঁদের জার্সি ও ব্যাটে উজ্জ্বল হয়ে রয়েছে – ‘এমআরএফ’। সারা বিশ্বের আর কোনো ব্র্যান্ডের সঙ্গে এতজন বিখ্যাত খেলোয়াড়ের নাম জুড়ে নেই বা আর কোনো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান একসঙ্গে এতজন বিখ্যাত খেলোয়াড়কে একসূত্রে বাঁধতে পারেনি। ‘এমআরএফ’ – আদি নাম যার ‘মাদ্রাজ রবার ফ্যাক্টরি’, ১৯৪৬ সালে কে এম মাম্মেন মাপ্পিলাই মাত্র ১৪০০০/- টাকা পুঁজি করে খেলনা বেলুন দিয়ে এই প্রতিষ্ঠানের পত্তন করেছিলেন মাদ্রাজের কাছে তিরুভত্তিযুরে। মাত্র চার বছরের মধ্যেই সংস্থাটি ল্যাটেক্স কাস্ট খেলনা, গ্লাভস ও গর্ভনিরোধক ব্যবসার প্রসার করে এবং ১৯৫২ সালে সম্পূর্ণরূপে রবার উৎপাদনকারী সংস্থায় পরিণত হয়। পরবর্তীতে রবার টায়ার তৈরীতে অন্যতম …
শেয়ার বনাম মিউচুয়াল ফান্ড
বিনিয়োগ সংস্কৃতির বাংলার বুকে ঢেউ তোলা শুরু নব্বই দশকের মাঝামাঝি। এবং তা জাঁকিয়ে বসে চলতি সহস্রাব্দের শুরুতে। তার আগে পর্যন্ত বাঙালির উদ্বৃত্ত অর্থের গন্তব্য হত পোস্ট অফিস কিংবা ব্যাঙ্কের ফিক্সড ডিপোজিট স্কিম। তাতে যতটা টাকা বাড়ে, তাতেই সকলে তুষ্ট হতেন। গত শতকের বাবারা মেয়ের বিয়ের কথা ভেবে কিষাণ বিকাশ পত্র কিংবা পিপিএফ করেছেন, কিন্তু এসআইপি করেছেন কি কেউ? এবার ভ্রূ কুঁচকে প্রশ্ন করতেই পারেন – আরে! এসআইপি! সে তো এই সেদিনের কথা! সেই যুগে এসআইপি কোথায়! সত্য কথা, কিন্তু এরও উত্তর আছে। সেজন্য একটু ধৈর্য ধরতে হবে। সহজ কথা হচ্ছে, একটা সময়ে টাকা জমানোর ‘সুয়োরাণী’ ছিল ফিক্সড রিটার্ন ইন্সট্রুমেন্ট, যা …
সভারেন গোল্ড বন্ড – সোনাতে ঝামেলামুক্ত বিনিয়োগ
‘সভারেন গোল্ড বন্ড‘ বা এসজিবি সম্পূর্ণ ঝামেলা মুক্ত বিনিয়োগ। না এখানে গয়না বানিয়ে পড়বার প্রয়োজন হয়, না থাকে লকারের ঝামেলা, না থাকে অতিরিক্ত খরচ। সম্পূর্ণ দুশ্চিন্তা মুক্ত পদ্ধতি। কর : এখানে লাভ সম্পূর্ণ করমুক্ত বিনিয়োগকারীর ক্ষেত্রে। সূচক নামা ওঠার জন্য ক্ষতির আশঙ্কা থাকেনা বিনিয়োগকারীর, কারণ এসজিবি তার সুরক্ষা প্রদান করে থাকে। বিক্রয়যোগ্যতা : রিজার্ভ ব্যাংকের আদেশানুসারে বন্ড প্রদানের দিন থেকে পনেরো দিন পর স্টক এক্সচেঞ্জ-এ বিক্রি করা যায়। হস্তান্তরযোগ্যতা : এস জি বি – গভর্নমেন্ট সিকিউরিটিস অ্যাক্ট এর নির্দেশানুসারে প্রতিটি শর্ত পূরণের পর এই বন্ড হাত বদল করা যায় | যোগ্যতা : এই বন্ড বিক্রি করতে পারে কেবল মাত্র ভারতবর্ষে …
সোনার বিকল্প বিনিয়োগ – গোল্ড ইটিএফ
পুরাকাল থেকে আপামর ভারতবাসীর সোনার ওপর প্রবল আকর্ষণ। আকর্ষণের পরিমাণ এতটাই সন্তান অথবা স্নেহের কাউকে আজও ‘সোনা’ বলে ডাকা হয় ঘরে ঘরে। গহনার উপাদান বা ধাতু হিসেবে হীরে, প্ল্যাটিনাম যদিও অনেক বেশি দামি তবুও সোনার প্রতি আগ্রহে আজও এতটুকু খাদ পড়েনি। বহুমূল্যবান সোনাকে অন্নপ্রাশন, পৈতে, বিয়ে সব অনুষ্ঠানে অপরিহার্য বলে ধরা হয় অথচ সোনা কিনে বাড়িতে রাখা যথেষ্ট সমস্যা আজকের আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে। চুরির ভয় থেকে যায়, তাই সোনা রাখার জন্য ব্যাঙ্কের লকারের শরণাপন্ন হতে হয়। অর্থাৎ প্রচুর দাম দিয়ে সোনা কেনবার পরেও তার পেছনে আরো আর্থিক খরচের প্রয়োজন। সোনাকে স্ত্রীধন হিসেবে ধরা হয়। যেকোনো বিপদের সময়, যেমন আর্থিক অনিশ্চয়তায়, দুর্দিনে …
ইক্যুইটি লিঙ্কড সেভিংস স্কিম – কর ছাড়ের সুযোগ
আয়করের ৮০ সি ধারা তে “ইক্যুইটি লিংকড সেভিংস স্কিম” (ইএলএসএস) এ বিনিয়োগ করা সুবিধেজনক। “ইক্যুইটি লিংকড সেভিংস স্কিম” এ সিস্টেম্যাটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান’ (এসআইপি) -এর মাধ্যমেও বিনিয়োগ করা যায়। এই বিনিয়োগ ইক্যুইটিতে হওয়ার জন্য অধিক মাত্রায় লভ্যাংশ দিতে সক্ষম, সঙ্গে বিনিয়োগকারীর সম্পদও বাড়ায়। “ইক্যুইটি লিংকড সেভিংস স্কিম” এ বিনিয়োগের জন্য গ্রোথ এবং ডিভিডেন্ড দুটি বিকল্প আছে। বার্ষিক আয়ের ওপর কর – ৮০সি এর যেকোনো প্রকল্পের মত এই প্রকল্পে বিনিয়োগ করলে বার্ষিক দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত সর্বোচ্চ আয়ের ওপর কর ছাড় সম্ভব। এই বিনিয়োগের ক্ষেত্রে একটি নিয়ম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে এই সুবিধে পাবার জন্য ৩ বছরের জন্য বিনিয়োগ করা বাধ্যতামূলক। লাভের ওপর …
করোনা যুদ্ধে শেয়ারবাজার – লড়বেন কী কৌশলে?
বিশ্বযুদ্ধ যাঁরা দেখেছেন তাঁরা কী বলবেন জানি না। যারা শুধু করোনা যুদ্ধটাই দেখলাম, তারা ভাবছি এ কী হল! মুম্বই শেয়ারবাজারের সূচক – সেনসেক্স যে মাসখানেকের ব্যবধানে ৪১০০০ থেকে সোজা ২৫০০০-এর ঘরে নেমে আসবে তা কী ভেবেছিলেন কেউ? তারপর আবার কী ঘটল যে করোনার আবহেই ৩৮০০০-এ ফিরতে হল সেনসেক্সকে! এই ডামাডোলে কী করবেন শেয়ারবাজারে – যাঁরা বিনিয়োগ করতে চান, অথবা যাঁরা আগে বিনিয়োগ করে ফেলেছেন, কিংবা যাঁরা করতে চাইছেন, কিন্তু এখনও করে উঠতে পারেন নি? কী কৌশল হবে – শেয়ারবাজারে করোনা যুদ্ধে? কৌশল ১ – কোন সময়ে কী করবেন যেকোনো জরুরি অবস্থার মত করোনা অতিমারীর সময়েও সারা বিশ্বে বিনিয়োগ অস্বাভাবিক পরিস্থিতির …
ইক্যুইটি বা ইক্যুইটি শেয়ার
কোনো সংস্থার ইক্যুইটি বা ইক্যুইটি শেয়ার যাঁর আছে, তিনি আসলে সংস্থাটির অংশীদার, মানে শেয়ার হোল্ডার। ছোট বা বড় যে মাপেরই ইক্যুইটি হোক না কেন, তিনি ওই সংস্থার ব্যবসায়ের ভাল এবং মন্দ – দুয়েরই দায়ভাগী। একজনের ইক্যুইটি বা অংশীদারিত্ব যতটা, তিনি সংস্থার লাভের ততটা হকদার। সেই লাভ কোম্পানিটি তাঁকে দুভাবে দিতে পারে। লভ্যাংশ অর্থাৎ ডিভিডেন্ড বিতরণ করে, অথবা নিজের লাভক্ষতির খতিয়ানে রিজার্ভ’ হিসেবে জমা রেখে। কথা হচ্ছে, কোম্পানির রিজার্ভে লাভের টাকা জমা থাকলে সাধারণ বিনিয়োগকারীর কী লাভ? একে পরিভাষায় বলা হয় ‘ক্যাপিটাল অ্যাপ্রিসিয়েশন’ বা মূলধনী মূল্যায়ন। কোম্পানির ‘বুক ভ্যালু’ অর্থাৎ খাতায়-কলমে এই লাভ তোলা থাকে আর বিনিয়োগকারী যতদিন অংশীদারি রাখছেন ততদিন …
ডাবর – বাংলার গৌরবময় বাণিজ্যের ইতিহাস
ডাবর… আমাদের নিজস্ব কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত, যেমনটা তখন বলা হত। ডাক্তার এস.কে. বর্মন সাধারণ নিম্নবিত্ত মানুষের দুরারোগ্য চিকিৎসায় বিভিন্ন আয়ুর্বেদিক ওষুধ ব্যবহার করা শুরু করেন একমাত্র নিম্নবিত্ত মানুষের অর্থনৈতিক অসঙ্গতার কথা মাথায় রেখে। মনে রাখতে হবে সেই সময় কলেরা, ম্যালেরিয়া, প্লেগে আক্রান্ত বহু মানুষ। খুব তাড়াতাড়ি বিশ্বস্ত ‘ডাক্তারের’ ওষুধের কথা এবং রুগীর আরোগ্যের কথা বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। ‘দেবাংগিরি’ এই চিকিৎসা পদ্ধতি ডাবরের কর্ম যজ্ঞ ও নামের উৎসস্থল। ‘ডাবর’ – ডাক্তার বর্মনের অক্লান্তপ্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৮৪তে। তাঁর তৈরি ওষুধের বড় মাপের উৎপাদন শুরু হয়১৮৯৬তে। ১৯০০ সালে শুরু হয় প্রাকৃতিক ভেষজ ওষুধ তৈরি। ১৯১৯এ প্রতিষ্ঠা হয় ‘ডাবর’এর নিজস্ব গবেষণাগার। ১৯২০ সালে ‘নরেন্দ্রপুর’ এবং …