ইক্যুইটি বা ইক্যুইটি শেয়ার

ইক্যুইটি বা ইক্যুইটি শেয়ার

কোনো সংস্থার ইক্যুইটি বা ইক্যুইটি শেয়ার যাঁর আছে, তিনি আসলে সংস্থাটির অংশীদার, মানে শেয়ার হোল্ডার। ছোট বা বড় যে মাপেরই ইক্যুইটি হোক না কেন, তিনি ওই সংস্থার ব্যবসায়ের ভাল এবং মন্দ – দুয়েরই দায়ভাগী।

একজনের ইক্যুইটি বা অংশীদারিত্ব যতটা, তিনি সংস্থার লাভের ততটা হকদার। সেই লাভ কোম্পানিটি তাঁকে দুভাবে দিতে পারে। লভ্যাংশ অর্থাৎ ডিভিডেন্ড বিতরণ করে, অথবা নিজের লাভক্ষতির খতিয়ানে রিজার্ভ’ হিসেবে জমা রেখে।

কথা হচ্ছে, কোম্পানির রিজার্ভে লাভের টাকা জমা থাকলে সাধারণ বিনিয়োগকারীর কী লাভ? একে পরিভাষায় বলা হয় ‘ক্যাপিটাল অ্যাপ্রিসিয়েশন’ বা মূলধনী মূল্যায়ন।  কোম্পানির ‘বুক ভ্যালু’ অর্থাৎ খাতায়-কলমে এই লাভ তোলা থাকে আর বিনিয়োগকারী যতদিন অংশীদারি রাখছেন ততদিন তা তাঁর। কালই যদি সংস্থাটি পাততাড়ি গোটায়, তবে ওই টাকা তিনি পাবেন। সংস্থা যতদিন জীবিত, ততদিন তিনি ওই টাকা দাবী করতে পারেন না, কিন্তু ওই লাভের প্রভাব সরাসরি পড়ে সংস্থার শেয়ারের বাজারদরে। মানে, বাজারে শেয়ার বিক্রি করে তিনি ক্যাপিটাল অ্যাপ্রিসিয়েশন-এর লাভ উসুল করতে পারেন।

কোনও চলতি সংস্থা যখন বাজারে নতুন শেয়ার ছাড়ে, তার মূল্যায়ন হয় মূলধনের সঙ্গে রিজার্ভ-সারপ্লাসকে জুড়ে। বাজারে যখন কেউ শেয়ার কেনেন, তিনি কোম্পানিটির লাভক্ষতির হিসেব কড়ায়গণ্ডায় বুঝে নেন। সেখানেও হিসেব হয় লাভক্ষতি এবং জমাখরচ সবকিছু ধরে। যার লাভ বেশি তার চাহিদা বেশি। আর বাজারদর তৈরি হয় চাহিদা-যোগানের নিয়ম মেনে। একেই বলা হয় শেয়ারের ভ্যালুয়েশন।

এত গেল লাভ, মানে ভালর কথা। ক্ষতি অর্থাৎ মন্দের ক্ষেত্রে? শেয়ার হোল্ডার বা অংশীদার তো ভালমন্দ দুয়েরই ভাগীদার। কোম্পানির পরিচালককে হবেন, তা ঠিক করেন সব অংশীদার এক হয়ে, প্রত্যেক বছর বার্ষিক সাধারণ সভায়। তাই যাঁদের সাধারণ সভায় ভোটাধিকার আছে, তাঁদের সবার উপরে পরিচালন পর্ষদের কাজের দায় সমানভাবে বর্তায়। তাই ক্ষতি হলে তার দায় থেকে শেয়ারহোল্ডার হাত ধুয়ে ফেলতে পারেন না! ক্ষতির অংশও শেয়ার প্রতি চুলচেরা হিসাবে প্রত্যেক শেয়ারহোল্ডার-এর ভাগে পড়ে এবং তা ওই রিজার্ভ – যেখানে লাভের টাকা জমা আছে, সেখান থেকেই বাদ যায়। শেয়ারের ভ্যালুয়েশন –এর অঙ্ক বদলায় আর তার প্রভাব পড়ে সরাসরি শেয়ারটির বাজার দরে।

অতএব, শেয়ার যখন কিনবেন, বিনিয়োগকারীকে কোম্পানিটি কেমন কাজকর্ম করছে, তার নিয়মিত খবর রেখে চলতে হবে। না হলে কোন একদিন তাঁর লাভের টাকা অজান্তেই আকাশ ছুঁতে পারে, আবার সেই লাভের গুড় শূন্যে বিলীন হতেও দেরী না হতে পারে। সেজন্যেই শেয়ার-এ বিনিয়োগে ঝুঁকি বা রিস্ক আছে বলা হয়। আর কে না জানে, রিস্ক এর সঙ্গে রিটার্ন হল সমানুপাতিক। ঝুঁকি যত, লাভ (বা ক্ষতি) তত। আর তাই, সারা পৃথিবীর বিনিয়োগকারী মানুষের আকর্ষণ শেয়ারবাজারে। বলা বাহুল্য, যিনি যত বেশি জানেন বা খবর রাখেন, তিনিই তত বেশি ক্ষতি এড়িয়ে লাভের কড়ি ঘরে তুলতে পারেন।

আরও জানতে ফোন করুন এই নম্বরে +91 9051052222 বা ইমেল করুন [email protected] এ।

– অদিতি নন্দী

Share With

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *